ফ্রিল্যান্সিং কি ? এবং কিভাবে করতে হয় Freelancing

আমরা সকলেই জানি ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতি মাসে কমপক্ষে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা ইনকাম করা যায় , তা আবার ঘরে বসে ৷ অনেকেই প্রতি মাসে পাঁচ থেকে দশ লক্ষ টাকা কিংবা আরো বেশি ইনকাম করে থাকেন এ ফ্রিল্যান্সি করে , ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে আজকে আমরা জানিনা যার কারণে অহেতুক চাকরির পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে আমাদের বয়স অর্ধেক শেষ হয়ে যায় ,

 তারপরেও চাকরির দেখা পাইনা আর অন্যদিকে কেহ আবার ঘরে বসেই কাজ করে প্রতি মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করতেছে , প্রতি বৎসরে এ ফ্রিল্যান্সিং আয় বাংলাদেশের দুই হাজার কোটি টাকার উপরে থাকে অথচ আমরা জানিওনা ৷ 

যদিও এখন বর্তমানে সরকার ট্রেনিং সেন্টার চালু করেছেন প্রতি বৎসরে সরকারি হিসেব মতে ছয়শত জনকে ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে ৷ খবরেও প্রচার হচ্ছে বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে যার কারণে সবাই এখন জেনে নিতে পারছে ফ্রিল্যান্সিং কি জিনিস ,, আজকে আমরা কথা বলবো এ বিষয়ে , ফ্রিল্যান্সিং কাহাকে বলে , ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে করতে হয় , এবং কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন  


সহজ কথায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোন কাজ করাকে Freelancing বলে । আরো ভালভাবে খাইয়ে দিতে বলতে হয়, আমরা সাধারণত দেখতে পাই বিভিন্ন Computer এর দোকানে Graphics এর কাজ জানে এমন মানুষেরা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্টানে MS Office এর কাজ জানে এমন মানুষেরা কাজ করে । তারা একটা নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে নির্দিষ্ট সময় মেনে দীর্ঘ সময় ধরে একই BOSS এর কাজ করে । একই কাজগুলো Online এ “Contract Basis Short time” করাকেই Freelancing বলা হয় । এই কাজগুলো সাধারণত short time হয় এবং worker এবং buyer এর মধ্যে যৌথ সম্মতিতে হয় ।


Freelancing এবং Outsourcing এর মধ্যে পার্থক্য কি?

এই বিষয়টি নিয়ে সবাই দন্দ্বে থাকে, কিন্তু খুবই সহজ ব্যপার


যে কাজটি করে দিচ্ছে তাকে বলা হয় Freelancer, অর্থাৎ সে Freelancing করছে ;

আর যিনি কাজটি করাচ্ছেন তিনি Outsourcing করছেন, যার মানে হল তিনি বাইরে থেকে কাজটি করিয়ে নিচ্ছেন ।

কিভাবে শুরু করব? 

 [ খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ]

আমি যে প্রশ্নগুলো বেশিরভাগ করা হয় সেগুলোর উত্তরাকারে বিষয়টি পরিষ্কার করার চেষ্টা করবঃ


১) আমার কি কি যোগ্যতা থাকা লাগবে?

যোগাযোগ ক্ষমতা (English Written)

ইন্টারনেট সম্পর্কে ভাল ধারণা

Google এবং Youtube ব্যবহার এবং প্রয়োজনীয় তথ্য বের করে আনার মত দক্ষতা

প্রথমত এই দক্ষতাগুলি থাকলেই আপনি Freelancing এর যোগ্য । এখানে কোনপ্রকার একাডেমিক সার্টিফিকেটের মূল্যায়ন নেই, মূল্যায়ণ দক্ষতার ।


“অবশ্য এজন্য পড়ালিখা ছেরে দিয়ে Freelancing এর পেছনে দৌড়ালে পরবর্তীতে দুইপাশে মরুভুমি আর মাঝখানে সাগর দেখবেন,

কারণ Freelancing করতে সার্টিফিকেটের প্রয়োজন না হলেও Knowledge অবশ্যই প্রয়োজন যেটা একমাত্র শিক্ষা থেকেই পাওয়া সম্ভব “


২) Freelancing এ কি কি কাজ করা যায়?

এক কথায় অনলাইনে যা যা করা সম্ভব তার সব Freelancing এ করা যায় । Computer এর মাধ্যমে যা যা করা possible তা সবই Freelancing করার মত । Data Entry থেকে শুরু করে 3D Animation এর কাজও করা যায় । তবে সবগুলো মনে রাখা সম্ভব না এবং বলাও বেসম্ভব ।


তবে বাংলাদেশে প্রায় যেগুলো করে তা হলঃ


1.SEO (Search Engine Optimization)


2.Marketing


3.Article Writing


4.Graphics Design


5.Web design and development


6.Apps development


 ৩) ভাই, কোন কাজটা সহজ? কোন কাজটা করলে ভাল হবে এবং তারাতারি Earn করা যাবে?


এইসব প্রশ্ন করা বোকামী। যাকে এই প্রশ্নটা করবেন সে অবশ্যই নিজে যে কাজটা করে সে কাজটাকেই সহজ বলবে, কারণ সে কাজটা তার কাছে সহজ । কিন্তু, আপনার কাছে সে কাজটা সহজ বা ভাল নাও লাগতে পারে। আপনার কোন কাজে দক্ষতা বা ইন্টারেস্ট লাগবে সেটা অন্য কেউ বলে দিতে পারবেনা । সুতরাং, আগে সব কাজ সম্বন্ধে জানেন এবং নিজেই ঠিক করেন কোনটা নিয়ে কাজ করবেন ।


৪) কাজ কিভাবে শিখব?


কোনটা নিয়ে কাজ করবেন ঠিক করার পর এবার শিখার পালা।ইউটিউব এর চেয়ে বিশাল আর কিছু নেই।যারা নতুন,তাদের জন্য এটা একটা বিশাল সোর্স। আরও অনেক ওয়েবসাইট আছে যেগুলি আমি পরে মেনসন করবো। তাছাড়া, এখন ভালো ভালো আইটি প্রতিষ্ঠান আছে,যারা বিভিন্ন কোর্স করায়।


৫ টি ফ্রিল্যান্সিং সাইট ঘরে বসে কাজ করার জন্য -


Fiverr – Fiverr অনেক পুরোনো, বিশ্বাসী এবং অনেক প্রচলিত ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট যেখানে আপনি অনেক ধরণের কাজ করতে পারবেন। প্রত্যেকটি কাজ এখানে ৫ ডলার থেকে শুরু হয়। Graphic designing, Digital marketing, content writing, programming বা video & animation এরকম অনেক ধরণের বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারবেন।

Upwork – upwork আজকের দিনে অনেক নাম করা একটি ফ্রিল্যান্সিং সাইট, যেখানে ১২ মিলিয়ন ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করছে এবং টাকা আয় করছেন। প্রত্যেক বছর এখানে ৩ মিলিয়নের অধিক কাজ পোস্ট করা হয়। এখানে প্রায়, সব ধরণের কাজের জন্য লোকেরা freelancer দেড় খুজেঁন।

Freelancer – এখানে আপনারা প্রায় সব ধরণের কাজের জন্য ক্লায়েন্ট (clients) পেয়ে যাবেন। ১৩৫০ টি আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে (category) এখানে লোকেরা কাজ করছেন। এবং, সেগুলির মধ্যে কিছু হলো – accounting, finance, internet marketing, SEO, PHOTOSHOP, graphic designing, web design, mobile app এবং আরো অনেক অনেক বিষয় নিয়ে এখানে কাজ পেয়ে যাবেন।

Guru – ৩০ লক্ষ লোকেরা guru ওয়েবসাইটের সাথে জড়িত এবং এখন অব্দি ১০ লক্ষ কাজ এখানে করানো হয়েছে। এখানেও আপনারা, প্রায় সব ধরণের বিষয় বা niche নিয়ে কাজ খুঁজতে পারবেন। নিজের একটি প্রোফাইল বানিয়ে, তাতে নিজের কাজের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং জ্ঞানের ব্যাপারে সবটাই দিয়ে দিন। তারপর, লোকেরা আপনার প্রোফাইল এবং কাজের ব্যাপারে দেখে তাদের প্রয়োজন হিসেবে আপনাকে কাজ দিবে।

তাই, আপনি যদি নিজের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার কথা ভাবছেন, তাহলে ওপরে দেয়া ওয়েবসাইট গুলিতে গিয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন।


ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলিতে গিয়ে কি করবেন ?

এই ওয়েবসাইট গুলিতে গিয়ে, নিজের একটি প্রোফাইল (profile) বা একাউন্ট বানাতে হবে। আপনি আপনার একাউন্ট বানিয়ে তারপর নিজের প্রোফাইলে, কাজের অভিজ্ঞতা (work experience), আপনার social profiles, পড়াশুনা (education), নিজের প্রোফাইল পিকচার, দক্ষতা (skills), সবটার বিষয়েই লিখতে হবে।


আপনার প্রোফাইলে এটাও লিখুন যে, আপনি আপনার clients বা employer দেড় জন্য কিভাবে এবং কি কি কাজ করতে পারবেন। তাছাড়া, তারা তাদের কাজের জন্য আপনাকেই কেন বেঁচে নিবেন তার একটি ছোট কারণ লিখুন।


বিভিন্ন, ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলিতে যেগুলিতে আপনারা কাজ করতে চান, প্রোফাইল বানিয়ে আমি ওপরে বলা মতে ডিটেলস গুলি লিখুন।


এতে, বিভিন্ন employers বা clients রা যারা কাজ করাতে চান, তারা আপনার এবং আপনার কাজের অভিজ্ঞতার ব্যাপারে সহজে জেনে নিতে পারবেন। এবং, এতে এই সাইট গুলির থেকে কাজ পাওয়ার সুযোগ বেড়ে যায়।


এবং, যতটাই বেশি কাজ আপনি পাবেন, ততটাই বেশি টাকা আয় করার সুযোগ আপনার কাছে থাকবে।


আপনাকে দেয়া কাজ, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে করে আপনি আপনার ক্লায়েন্ট বা employer কে জমা দেয়ার পর, আপনাকে কাজটির জন্য যত টাকা দেয়ার কথা হয়েছিল, সেটা আপনাকে দিয়ে দেয়া হবে।


এবং, এভাবেই ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনলাইন  নিজের ইন্টারেস্ট (interest), অভিজ্ঞতা বা দক্ষতার সাথে জড়িত কাজ খুঁজে সেগুলি করতে পারবেন আর ঘরে বসে টাকা আয় করতে পারবেন।


ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা আয় করা যাবে ?

ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা আয় করার কোনো সীমা নেই। হে, এটাও এক রকমের ব্যবসা (business), যেখানে আপনার কাছে যত বেশি কাজ আসবে এবং যত বেশি কাজ আপনি করে দিতে পারবেন, ততটাই বেশি আপনার ইনকাম হবে।


PayPal এর একটি survey বা report হিসেবে, ২৩ % ভারতীয় ফ্রিল্যান্সাররা ৬০ লক্ষ টাকা প্রত্যেক বছরে আয় করছে।


এবং, বাকি ২৩% রা ২.৫ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকার ভেতরে টাকা আয় করছেন। তাছাড়া, বাকি ৫৪ % ফ্রিল্যান্সাররা ২.৫ লক্ষ থেকেও কম টাকা বছরে আয় করছেন।


তাই, সোজা ভাবে বললে, ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার বানালে লাভ আছে এবং এর থেকে আপনি লক্ষ লক্ষ টাকা ঘরে বসেই আয় করতে পারবেন। কিন্তু, আপনাকে ভরসা করে কতজন কাজ দিচ্ছে এবং কতটা কাজ আপনি সম্পূর্ণ করতে পারছেন, সেটার ওপরে আপনার আয় নির্ভর করবে।


আজ, অনলাইন এবং ইন্টারনেটের দুনিয়াতে সুযোগ অনেক রয়েছে। লক্ষ লক্ষ লোকেরা, বিভিন্ন ছোট ছোট কাজের জন্য, একজন কর্মচারী (employee) রেখে তাকে মাসে মাসে টাকা দেয়ার থেকে, একজন freelancer কে দিয়ে সেই কাজ অনেক কম টাকায় সহজে করিয়ে নিচ্ছেন।


কোনো বিশেষ কাজে, আপনার যত বেশি অভিজ্ঞতা (experience) থাকবে, ততটাই বেশি টাকা আপনি প্রত্যেক কাজের জন্য চার্জ (charge) করতে পারবেন।


আজ তাহলে এই পর্যন্ত সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এ কামনা করেই শেষ করছি আল্লাহ হাফেজ

No comments

Powered by Blogger.